বাংলাদেশকে নিয়ে আমেরিকার ষড়যন্ত্র এবং কিছু কথা

বর্তমানে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা এবং মিডিয়ায় উঠে আসছে বাংলাদেশকে নিয়ে আমেরিকার বেশকিছু শক্তিশালী পদক্ষেপ। যেখানে রয়েছে হালকা-পাতলা নিষেধাজ্ঞা। গণমাধ্যমে আলোচিত-সমালোচিত হয়েছে এই খবরটি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বেশকিছু কর্মকর্তা এ নিষেধাজ্ঞা আওতাধীন রয়েছে অনেকে এটিকে বাংলাদেশের প্রতি আমেরিকার অশনি সংকেত হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

আমেরিকা হলো বর্তমান সময়ে একটি পরাশক্তি। বিভিন্ন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক রাজনৈতিক সহ বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা এবং বাধা-বিপত্তির সৃষ্টি করে স্বার্থ আদায় করতে চেয়েছে বিশ্ব মোড়লের আসনে থাকা এই দেশটি। তবে যাই হোক আমাদের দেশের প্রতি যেকোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা বা বাধা বিপত্তির সৃষ্টি করা মানে হল দেশকে নিয়ে আমেরিকার কিছু স্বার্থ আদায়ের পাঁয়তারা।

কি চায় বাংলাদেশের কাছে আমেরিকা?

বিভিন্ন সময়ে আলোচকগণ বিভিন্ন স্বার্থকে চিহ্নিত করেছেন। আবার কেউ বলছেন এটি বাংলাদেশের কিছু বিরোধীদলীয় নাগরিকগণ যারা আমেরিকা কিংবা কানাডায় বসবাস করছেন তাদের ষড়যন্ত্র। অর্থাৎ এটি বিরোধী দলের ষড়যন্ত্র হিসেবে চিহ্নিত করছে। সরকার এই সময়ে তাদের পাসপোর্ট বাতিলের কথা চিন্তাভাবনা করছে।

কিন্তু এর পিছনে কারা?

ধরে নিলাম এটি হতেও পারে বিরোধী দলের ষড়যন্ত্র যারা কিনা নিজের পায়ে কুড়াল মারার মত এই কাজটি করছে। অর্থাৎ নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু যে সমস্ত বিষয় আমেরিকা নিষেধাজ্ঞার কারণ হিসেবে তুলে ধরেছে আসলে কি সেগুলো ফেলে দেয়ার মত???

কয়েক দশক ধরেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। যে সরকারই আসুক না কেন তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিজেদের স্বার্থে বারবার ব্যবহার করছে। যার ফলে তাদের কর্মকাণ্ড অতীত থেকেই দেশে সাধারণ জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ক্রসফায়ার, বিনা ওয়ারেন্টে তুলে নেওয়া, বিনা বিচারে বন্দি রাখা, জেলে অত্যাচার-নির্যাতন এসমস্ত বিষয় আমাদের দেশে নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হল এসব ঘটনার পেছনে সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের কিংবা প্রভাবশালীদের হাত রয়েছে। যারা আজকে বুক ফুলিয়ে বলছে যে এসব কোন দেশ বিরোধীদের কাজ, বিরোধীদলীয় ষড়যন্ত্র, চক্রান্তকারীদের কাজ; তাদের অন্তত এটুকু চিন্তা করা উচিত যে আসলে তারা যে সমস্ত অভিযোগ দাঁড় করাচ্ছে এর পিছনে তারাই দায়ী। দলীয় স্বার্থে কিংবা ক্ষমতার অপব্যবহার করে যখন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে গণহারে ব্যবহার করা হচ্ছে, তখন এসব কর্মকাণ্ড বিদেশিদের চোখে প্রশ্নবিদ্ধ হওয়াটাই স্বাভাবিক। যখন ক্ষমতাকে ব্যবহার করে আমরা অন্যায় অবিচার করি আর ভেবে থাকি যে ক্ষমতা আমার যা ইচ্ছা তাই করবো, কে কি করবে! কিন্তু এখন বাস্তবে দেখা যাচ্ছে যে নিজেদের করা অপকর্মগুলো বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের কিংবা অপশক্তিদের আঙ্গুল তুলতে বাধ্য করছে।

অর্থাৎ আমার বিচার আমি করিনি তাই পড়শী করতে বাধ্য হচ্ছে।