গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা এক আজব খেলা, যেখানে রাজনৈতিক দলের শাসন এবং নির্বাচন হল খেলার মাঠ। আর সেই মাঠে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী নামক তুখোড় খেলোয়াড়েরা জনগণের ভবিষ্যৎ উন্নতির স্বার্থ সমৃদ্ধ এবং অর্থভান্ডারে পরিপূর্ণ মূল্যবান ফুটবলটি নিজের কাংখিত গোলপোস্টে ঢুকানোর জন্য কাড়াকাড়ি করে।
রেফারি হিসাবে থাকে এই খেলার প্রবক্তা বিশ্বমানবতার আব্বুরা। যেই দেশ বা জাতি এই খেলায় বিশৃঙ্খলা তৈরি করে বা খেলতে অনিচ্ছুক হয় সেখানেই হয় অর্থনৈতিক অবরোধ নয় বাহিনী নিয়ে হাজির হয় বিশ্বমানবতার আব্বুরা।
আর তার চেয়ে ও বড় আশ্চর্যজনক বিষয় হল খেলার মাঠ যে দেশেই হোক না কেন তার গোলপোস্ট গুলি প্রায়শই এই খেলার আদর্শিক গুরুদের দেশের ব্যাংকে বা বেগম পাড়ায় হয়। তাই এত দূরত্বে বল পৌঁছানো ৯০ মিনিট নয় বরং ২৫ লক্ষ ৯০ হাজার মিনিটে ও শেষ হয় না।
খেলার স্টেডিয়াম ভর্তি আবেগী আমজনতা এক অজানা উন্মাদনায় অনিশ্চিত প্রাপ্তির আশায় ছাগলের মত লাফালাফি করে। কেননা তাদের স্বার্থ,অর্থসম্পদ এবং উন্নতির আশার বাতাস ভর্তি এই ফুটবলটি মিথ্যা রাজনৈতিক ওয়াদা আর জনসেবার কঠিন প্রতিশ্রুতির মোড়কে মোড়ানো হয় এবং গোলপোস্ট গুলো উন্নয়ন প্রকল্পের মায়াজালে ওতপ্রোতভাবে জড়ানো থাকে।
যদি কখনও বল সাইড লাইনের বাইরে এসে আমজনতার চোখে আসল রুপে ধরা দেয় বা খেলোয়াড় ফাউল করে তবে তা ঢাকার জন্য ফ্রী কিকের বদলে ফ্রী ইস্যু তৈরীর সুযোগ দেয়া হয়। এই ভাবে দলের পর দল আসে, ম্যাচের পর ম্যাচ হয় কিন্তু খেলার রেফারি, নিয়ম আর গোলপোস্ট কখনো পরিবর্তন হয় না।
এই নির্বোধ ছাগলরূপি আমজনতা বিভিন্ন দল আর ম্যাচের পরিবর্তনকেই বহু আকাঙ্খিত স্বাধীনতা, মুক্তি, উন্নতির কাঠাল পাতা প্রাপ্তির অপূর্ব সুযোগ মনে করিয়া এক মরীচিকার মরুভূমিতে আত্নতৃপ্তির ঢেকুর তোলে!
কিন্তু প্রতিপর্বের খেলা শেষে দেখা যায় যে, আমজনতার ধনভাণ্ডার রিক্ত করে সোনার বল, আর শিরোপা – প্রাইজমানি নিয়ে ধূর্ত খেলোয়াড়গণ মুরুব্বীদের দেশে পাড়ি জমায়।
তবু্ও সুশীল জাতি বারংবার নতুন মোড়কে পুরনো পণ্যই কিনিতে অভ্যস্ত!!!!