“জুলাই আসবে”
এরকম ঘোষণা না হলেও বাংলাদেশ এ নতুন রাজনৈতিক দল আসবে, নতুন দলের উদ্ভব হতে যাচ্ছে, নতুন রাজনৈতিক বন্দবোস্ত আসতে যাচ্ছে,,,,,,,, এরকম বহু সংবাদ ড্যান ম্যাজিনো এবং বিবিসি সহ বিভিন্ন পশ্চিমা পন্থী পত্রিকাগুলো জুলাই এর অনেক আগে থেকেই বলতে ছিল। কারণ এ জুলাই পশ্চিমাদের গণতন্ত্র – গণতন্ত্র খেলার অংশ। দীর্ঘ সময়ের প্ল্যানড কারিকুলাম।
২০০৭ তে ও মানবতার আব্বুরা চেয়েছিল খোলামেলা লিবারেল সরকার। কিন্তু তখন আবার আফগানিস্তানে ও ছিল ভারতকে পাশে রাখার দরকার। আবার বাংলাদেশ নামক ভাংগাদেশেও আওয়ামীলীগকে ছিল ভারতের দরকার। তাই মুরুব্বি কে নোবেল দিয়েই তড়িঘড়ি করে সুশীল নাগরিকদের নিয়ে দল গঠন করিয়েও পরিকল্পনা বাদ দিতে হয়। বেশকিছু সমন্নয়ক কিন্তু নোবেল মুরুব্বীর দলের প্রাক্তন ছাত্র সংগঠন “ছাত্রশক্তি” র লিডার। এরা মানবাধিকার/সুসাশন/গণতন্ত্রের উন্নয়নের নামে গজিয়ে উঠা পশ্চিমা এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী বিভিন্ন এনজিও /সংস্থার দীর্ঘপরিশ্রমের ফসল।
২০১৮ তেও চেয়েছিল কোটা ইস্যুতে একটা বিপ্লব ঘটানোর জন্য গণঅধিকার পরিষদ কে দিয়ে। সেবার ফাদে পা না দিলেও কিন্তু ২০২৪ এ আবার হাসিনা একই ফাদে পা দিয়েছে।
হাসিনা আলেম সমাজ, জামায়াত কে বিলুপ্ত করতে চেয়েছিল ভারতের স্বার্থে, ইসলাম বিরোধী আইন এবং পদক্ষেপ নিয়েছিল পশ্চিমা এনজিওর স্বার্থে, জংগী নাটক সাজাতো মানবতার আব্বুদের খুশী করার জন্য। কিন্তু তার ঋণের অর্থ লুটপাট এবং অত্যাচার গণতন্ত্র তথা সেকুলারিজম এর সীমা ছাড়িয়ে গিয়ে অটোক্রেসির দিকে হাটছিল। তাই আব্বুদের রোষানলে পড়তে আর বিলম্ব হয় নি ।
আসলে জুলাই ছিল একটা সময়ের অপেক্ষা, কোন একটা সুযোগ এর অপেক্ষা। কারণ আমজনতার আবেগকে ব্যাবহার করে মাঠে নামাতে হলে কোন উসিলার তো প্রয়োজন। আর মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবে ব্যাবহার করা হয়েছে অবুঝ শিশুদের, অপরিণত জ্ঞান সম্পন্ন বালকদের, যৌবনের উদ্দাম শক্তিতে বাধা না মানা যুবকদের। যারা বিশ্ব রাজনীতির মারপ্যাঁচ বুঝা তো থাক দূরের কথা – তাদের কচি অন্তরে রাজনৈতিক কূটচাল এর নূন্যতম ধারণা টুকুন ও নেই। তাই কোলের বাচ্চা থেকে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিশুকিশোররা ই বেশী মারা গিয়েছে । আর জীবন দিয়েছে খেটে খাওয়া শ্রমিক, মধ্যবিত্ত, পথচারী।
কিন্তু কোন মাস্টারমাইন্ড, কোন সমন্নয়ক জীবন দেই নাই। মারা যায় নি কোন রাজনৈতিক নেতা, উচ্চবিত্ত – এলিট শ্রেণীর কেউ।
একদিকে হাসিনার মাত্রাহীন পাপ আর জুলুম অন্যদিকে অত্যাচারীত নিষ্পেষিত জনতার ক্ষোভ প্রকাশের সুযোগ এই দুইটা একসাথে মিলে যাওয়াই মুরুব্বীদের কেল্লাফতেহ!!!
এখন ফ্যাসিবাদের প্রোডাক্ট বা ফল কে ফ্যাসিবাদ বলে চালিয়ে দিয়ে মূল গাছ কে জিয়িয়ে রাখা হচ্ছে। গণতন্ত্র নামক বিষবৃক্ষ রোপিত হয়েছে ইংরেজ শাসন আমলে। সেই থেকে আজও একটার পর একটা বিষাক্ত ফল দিয়েই যাচ্ছে। ১৯৪৭, ১৯৫৬, ১৯৭১, ১৯৭৫, ১৯৯০, ১৯৯৬, ২০০৭, ২০২৪ তার প্রমাণ।
সাথে বাংগালি মুসলমানদের আবেগ নিয়ে খেলা হয়েছে এবং হচ্ছে। কারণ পশ্চিমারা জানে আমরা এক অদ্ভুত জাতি। কিছু মুসলমান, কিছু বাংগালী, কিছু মর্ডান ।
মিলাদ মাহফিলেও যাই, আবার গানের আসরে ও হাততালি দেই ।
মসজিদে সিগারেট খাই না, কিন্তু বারে লাল পানি খাই। কুকুর-শুকুর খাই না, কিন্তু সুদ খাই। কেউ দান করলে অসম্মানবোধ করে সহজে নেই না, কিন্তু ঘুষের টাকা ঠিকই চেয়ে নেই।
জুমার নামাজে মসজিদে স্থান সংকুলান হয় না, কিন্তু ফজরের নামাজে প্রথম কাতারই অপূর্ণ থেকে যায়।
ভিন্নপুরূষ এর সামনে নিজেকে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করার জন্য বেপর্দা চলাফেরা করি, কিন্তু কেউ সেই সৌন্দর্য দেখে আকৃষ্ট হয়ে মন্তব্য করলে অস্বস্তি বোধ করি।
কোন অপরাধ হলে শরীয়াহ আইনের মত শাস্তি দাবি করি, কিন্তু আবার খিলাফত এর দাবী তোললে (নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক) বিরোধিতা করি।
সারা দুনিয়ায় ইসলাম প্রতিষ্ঠা হোক সেই স্বপ্ন দেখি, ফেসবুকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে শহীদ হওয়ার প্রতিজ্ঞা করি , মোনাজাতে শাহাদাত কামনা করি, কিন্তু জিহাদের আলাপ উঠলে জংগীবাদ এর তোকমা লাগিয়ে লেজ গুটিয়ে নেই।
এই আমাদেরকে ধোকা দিয়ে ” নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্ত”, “নতুন সংবিধান ” “নির্বাচন” এর নামে নতুন বোতলে পুরনো মদ গেলানোর চেষ্টা । আমাদের খুশি করে ফায়দা লুটার জন্যই মাস্টারমাইন্ডদের “বাংগালী/ রিভারাইন মুসলমান” তত্ত্ব। ” ইনকিলাব “, ” ইমাম “, “শহীদ”…… ইত্যাদি শব্দ চয়ন।
আসলেই কী অদ্ভুত জাতি আমরা!!!