প্যারাসিটামল তত্ত্ব এবং অ্যান্টিবায়োটিক ভীতি

হে মুসলমান জাতির সন্তানেরা,

বিধর্মীগণ আমাদের মধ্যে এত বড় বড় ধোকার মায়া জাল এমন ভাবে বিস্তৃত করিয়া রাখিয়াছে যে আমরা উহাতে আবদ্ধ হইয়া শুধু ঘুরপাক খাইতেছি এবং আমাদের প্রকৃত পরিচয় এবং উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য পর্যন্ত ভুলিয়া গিয়াছি।

তাহারা আমাদের ব্যাক্তি-স্বাধীনতার নামে মুসলিম রীতিনীতি নষ্ট করত প্রবৃত্তির গোলামীতে আবদ্ধ করাইয়াছে । প্রকৃতপক্ষে আমরা মহান আল্লাহর গোলাম। তিনি আমাদের পরিপূর্ণ ব্যাক্তিগত স্বাধীনতা দান করিয়াছেন। আর তাহারা ব্যাক্তি-স্বাধীনতার নামে আমাদের সেচ্ছাচারীতার দিকে ধাবিত করিতেছে।

তাহারা সুকৌশলে (নাউযুবিল্লাহ) ধর্মনিরেপক্ষতার নামে ধর্মহীনতা এবং অসাম্প্রদায়িকতার নামে মুসলমানদের ধর্মীয় পরিচয় মুছে দেয়ার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করছে।

তাহারা সুকৌশলে (নাউযুবিল্লাহ) ধর্মনিরেপক্ষতার নামে ধর্মহীনতা এবং অসাম্প্রদায়িকতার নামে মুসলমানদের ধর্মীয় পরিচয় মুছে দেয়ার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করছে।

তাহারা নারীঅধিকারে নামে নারীর উপর পুরুষের বোঝা চাপাইয়াছে।

তাহারা নারী স্বাধীনতার নামে নারীকে বেপর্দা করত অর্ধ উলংগ করিয়া রাস্তায় বাহির করিয়া বেইজ্জত করিতেছে।

নারী পুরুষের ভোগপণ্য নয় এই বলিয়া স্বামী-স্ত্রীর স্বাভাবিক সম্পর্ক(অথচ স্বামী-স্ত্রী উভয় উভয়ই কে উপভোগ করে) নষ্ট করিয়া হাজারো পুরুষের ভোগ পণ্য বানাইয়াছে।

তাহারা স্বাধীন গণমাধ্যমের ধোঁয়া তুলে। অথচ দুটোই প্রতারণামূলক অবাস্তব কথা। কোন সংবাদ মাধ্যম / টিভি চ্যানেল ই সরাসরি জনগণের মাধ্যমে পরিচালিত হয়না বা জনগণের টাকায় চলে না। এগুলো চলে বিজ্ঞাপন সংস্থা, বা দলীয় টাকায়। এদের প্রত্যেকটি কোন না কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বা সরকারি মালিকানাধীন, তাহাদের কর্মী গণ স্বাধীন নয়। সুতরাং ইহারা কখনোই ব্যাক্তি বা দলীয় স্বার্থের বাইরে এসে আমজনতার কথা বলিবে না।

তাহারা আমাদের দেশীয় স্বাধীনতার স্বাদ উপভোগ করানোর নামে আমাদের টুকরা টুকরা(ডিভাইড এন্ড রুল পলিসি) করিয়া বিশ্ব মুসলিম রাজত্ব তথা খিলাফত নষ্ট করিয়া দিয়াছে।

আমাদের মধ্যে শান্তি, সমতা প্রতিষ্ঠার নামে তাহারা বহু মতবাদ( গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, কমিউনিজম, সেকুলারিজম, উদারতাবাদ, পুজিবাদ ………..) ঢুকাইয়া দিয়া আমাদের মধ্যে দলাদলি এবং মতবিরোধ সৃষ্টি করত বিভিন্ন রুপে শোষক- শোষিত শ্রেণীর উদ্ভব ঘটাইয়াছে। যাহা আমাদের প্রকৃত শান্তি (ইসলাম) কাড়িয়া লইয়াছে।

তাহাদেরই একদল এজেন্ট( এনজিও, ঋণদাতা গোষ্ঠী, গোয়েন্দাসংস্থা) দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করিয়া এই অর্থ এবং ক্ষমতা লোভী শাসক শ্রেণিকে শোষকে পরিণত করিয়া তুলে, আর তাহাদেরই আরেকদল এজেন্ট( গণমাধ্যম, সুশীল, বিরোধীদল, গোয়েন্দা) এই সব নির্বোধ নিষ্পেষিত আমজনতাকে স্বৈরাচার/ শোষণের বিরুদ্ধে ক্ষেপাইয়া তুলে। আর তখনই ঐ সব বিশ্বমোড়ল গণ হই হই রব তুলে নিত্য নতুন ফর্মুলা নিয়ে আমজনতার কান্ডারী রুপে হাজির হয়। পরিশেষে বিভিন্ন বিপ্লব আর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মাধ্যমে সরকার/ রাষ্ট্রের পতন ঘটাইয়া স্বাধীনতা নামে মরীচিকার মরুভূমিতে আধামরা আমজনতাকে আত্নতৃপ্তির ঠেকুর তোলায়।

কথিত মানবতাবাদী বিশ্বমোড়ল গণ বার বার সরকারের রুপ পরিবর্তন করায়, বসন্ত- বিপ্লব ঘটায়, কিন্তু কখনো তাহাদের নীতি পরিবর্তন করে না। কখনো তাহাদের বানানো ফর্মুলার ( গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, কমিউনিজম, সেকুলারিজম, উদারতাবাদ, পুজিবাদ ………..) বাইরে কোন পরিবর্তনের কথা বলে না।

আর নির্বোধ আমজনতা ঐসব মানবতার আব্বাদের নিযুক্ত এজেন্টদের দেওয়া বিভিন্ন ফর্মুলা লইয়া খুব মাতামাতি করি। অথচ আমরা অতি সহজেই ভুলিয়া যায় যে উক্ত ডাক্তারদের ঔষধেই আমাদের এই করুণবস্থার বারংবার পুনরাবৃত্তি ঘটিতেছে।

ঐ ডাক্তার শ্রেণীর প্যারাসিটামলের কারণে ই ১৯০৫, ১৯১১, ১৯৪৭, ১৯৫২, ১৯৫৬, ১৯৬২, ১৯৬৯, ১৯৭১, ১৯৭৫, ১৯৮১, ১৯৯০, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৬, ২০০৯, ২০১৩, ২০১৮, ২০২৪ ইত্যাদি সময়ে থামিয়া থাকা জ্বরের বারংবার উদ্ভব ঘটিয়াছে।

কিন্তু এই নির্বোধ জাতির চক্ষু ফাকি দেয়ার জন্যই একেক সময়ে একেক নামে ( যেমনভাবে প্যারাসিটামল কে – নাপা, ফাস্ট, রেনোভা, এইচ,,,,,,,,,,ইত্যাদি নামে চালানো হয়) ঐ একই ঔষধ বাতলাইয়া দেয়া হইতেছে । আর ডাক্তার গুলিও একেক রূপের, তত্ত্বের, মতবাদের অন্তরালে থাকায় আমাদের কাছে প্রতিবার উহাকে নতুন ই মনে হইয়াছে।

কিন্তু জাতির প্রকৃত চিকিৎসক গণ যখনই আমাদের রোগের আসল কারণ নির্ণয় করিয়া এন্টিবায়োটিক ( ইসলামি শরীয়ত) বাতলাইয়া দিয়াছেন; (যার সোনালী ইতিহাস এখনো বিদ্যমান) ঠিক ততবারই ঐ ধূর্ত ডাক্তার শ্রেণী আমাদের চোখে যাদুর চশমা( তথাকথিত স্বাধীন গণমাধ্যম, সরকারি শক্তি, এনজিও, সুশীল সমাজ,,,,,,, এর প্রোপাগান্ডার ফসল) পরাইয়া প্রকৃত চিকিৎসকদের গ্রাম্য ডাক্তার, হাতুড়ে ডাক্তার ( সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী, জংগী) ইত্যাদি রুপে হাজির করিয়াছে।

আজকাল স্বাস্থ্য সংস্থাগুলি যেইভাবে প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে এন্টিবায়োটিক সতর্কতা বা ভীতি তৈরী করিতেছে যেন আমরা এন্টিবায়োটিক ব্যবহারে নিরুৎসাহিত হই, ঠিক তেমনি ঐ ডাক্তার শ্রেণী এবং তাহাদের এজেন্ট গণ আমাদের মস্তিষ্ক ধৌত করিয়া ইসলামী শরীয়ত কে (কঠিন, সময় অনপোযোগী, অপ্রগতিশীল , মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত, মৌলবাদ, ধর্মান্ধতা ) ইত্যাদি তকমা লাগাইয়া উহা পালনে আমাদের নিরুৎসাহিত করিতেছে যেন রোগের জীবাণু নির্মূল না হয়।

আর আমরা নির্বোধের মত ঐ সকল বিজ্ঞ(!) ডাক্তার গণের প্যারাসিটামল কেই প্রকৃত ঔষধ মনে করিয়া বারংবার গ্রহন করিতেছি আর রোগের জীবাণু শরীরে দিনের পর দিন আরও শক্তভাবে বাসা বাধিয়া রোগের মাত্রা বৃদ্ধি করিতেছে। অপরদিকে ঐ সকল বিজ্ঞ(!) জনদরদী ডাক্তারগণ বারংবার প্যারাসিটামল দিয়া উপসর্গের (জ্বর) হালকা উপশম ঘটাইয়া তাহাদের ব্যবসা চালু রাখিতেছেন যেন আমরা প্রকৃত রোগ এবং উহার ঔষধ ভুলিয়া যাই।

তাহাদের এজেন্ট গণ আমাদের
সামনে তথাকথিত গণমাধ্যম এবং সুশীল (সময়ের সাথে পরিবর্তনশীল) সমাজ ব্যবহার করিয়া আমাদের দুই চোখে দুই রঙের চশমা পরাইয়া দিয়াছে, যাহাতে আমরা একই জিনিস কে ভিন্ন ভিন্ন রূপে দেখিতে পাই।

তাহাদের শত্রুজাতি(আমরা) যখন নিজেদের মধ্যে যুদ্ধে/বিবাদে লিপ্ত হই তখন তা হয়ে যায় স্বাধীনতা যুদ্ধ/ বিপ্লব , আর ঐসকল যুদ্ধে/বিপ্লবে একপক্ষকে সাহায্য করা/ উস্কানি দেয়া তাদের জন্য ফরজ হইয়া যায় ( যেমন- খিলাফতের বিরুদ্ধে আরব বিদ্রোহ, ইরাক কুয়েত যুদ্ধ, পশ্চিম পাকিস্তান- পূর্ব পাকিস্তান যুদ্ধ, আরব বসন্ত )। আর তাহাদের নিজেদের মধ্যে যখন যুদ্ধ/ কোন্দল দেখা দেয় তখন তা হয় গৃহযুদ্ধ / অন্তর্দন্দ এবং সেগুলো তাহারা দ্রুত ই মিটাইয়া ফেলিতে চায় ( যেমন – আমেরিকার গৃহযুদ্ধ, বৃটিশ রাজসিংহাসন নিয়ে দ্বন্দ,ইউরোপের গৃহযুদ্ধ,,,,,,,ইত্যাদি)।

তাহারাই পরিকল্পিত ভাবে টুইন টাওয়ার ধ্বংস করাইয়া ওসামা বিন লাদেন কে বানায় সন্ত্রাসী, আবার লাদেনের দোহাই দিয়ে আফগান শরীয়াহ সরকার কে উঠিয়ে লক্ষ লক্ষ নিরীহ আফগান কে যখন হত্যা করে তা হয়ে যায় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ!!!

মিথ্যা মারণাস্ত্রের অভিযোগ, আর আইএস বানাইয়া ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়ায় যখন লক্ষ লক্ষ মুসলিম হত্যা করে তা হয় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। আর তালেবান, ফিলিস্তিনি এবং কাশ্মীরীরা যখন মাতৃভূমি রক্ষার্থে লড়াই করে তখন হয়ে যায় সন্ত্রাসী,জংগী,বিচ্ছিন্নতাবাদী !!!

রাশিয়ার ড্রোন আর মিসাইল হামলায় যখন ইউক্রেনে কয়েক হাজার খৃষ্টান মরে তখন হয়ে যায় সন্ত্রাসী হামলা, আর একই রাশিয়া যখন সিরিয়াতে নির্বিচারে বোমা মেরে লক্ষ লক্ষ মুসলিম মারে তখন হয়ে যায় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ!!!

এদের এজেন্টরা বলে না বৃটিশ বেনিয়াদের ২০০ বছরের গণহত্যা, নীলকরদের অত্যাচার, জমিদারদের শোষণ নির্যাতনের ইতিহাস।এদের মুখে ক্ষুদি(রাম!) বলে ফেনা উঠে আর প্রীতিলতা প্রীতিতে এদের দরদ উথলে উঠে(যারা দেশের জন্য নয় কমিউনিজমের জন্য ইংরেজ বিরোধী ছিল) কিন্তু শহীদ তিতুমীর আর হাজী শরীয়তুল্লাহ এর নাম এদের মুখে ভুলেও উঠে না।

পাকিস্তান, আফগানিস্তানের নাম বা আরবি, উর্দু, ফারসি শুনলেই এদের রক্তে আগুন ধরে যায়। বাংলা, বাংগালী, বাংলাদেশ বলে চেতনার ব্যবসা চালু হয়ে যায় । কিন্তু ভারত যে বাধ দিয়ে সোনার বাংলা কে তামা বানায়, আবার হঠাৎ ই পানি ছেড়ে দিয়ে বন্যার পানিতে চুবায়, বছর বছর সীমান্তে ফেলানীদের লাশ ঝুলায়, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের বুক চিড়ে ট্রানজিট নিয়ে যায়, মাটির নীচ দিয়ে গ্যাস নিয়ে যায়, দশটা অসভ্য চ্যানেল দিয়ে হিন্দি ভাষা আর ভারতীয় সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চালায়,,,,,,এসব শুনলে ওদের চেতনার ব্যবসা ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে যায়।

আর যুগ যুগ ধরে বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদী, আগ্রাসী, (আফ্রিকান, আমেরিকান, অস্ট্রেলিয়ান আদিবাসী দের) গণহত্যাকারী, লুটেরা শোষক, যারা আমাদের ২০০ বছর গোলাম বানিয়ে রেখেছিল এইসব আমেরিকান, বৃটিশ কিংবা ইউরোপীয়দের নাম নিয়ে এরা মুখে চিনির স্বাদ পায়।তাহাদের আদর্শিক প্রভুদের কোন পুরস্কার, সম্মাননা বা ভিসা পেলে তো আবেগের আতিসায্যে ইহাদের হুশ থাকে না।

এই তথাকথিত সুশীল (সুযোগ সন্ধানশীল) রাই বিধর্মীদের এজেন্ট। ইহাদের আদর্শিক পিতারা কখনো আমাদের প্রকৃত শান্তি চায় না। স্বৈরাচার/ফ্যাসিবাদের বিলোপ এরা চায় না। কারণ স্বৈরাচার/ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা না থাকলে হানাহানি, মারামারি, দলাদলি, শোষণ বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে নির্বোধ নিষ্পেষিত আমজনতা মুরুব্বী মানবে কাকে। দেশে বিবাদ/ মতানৈক্যই যদি না থাকে তবে সুশীল(!) সমাজ টকশোর প্লটে মুরুব্বী বনবে কিভাবে?

শোষণ এর বিলোপ হলে এদের ঋণের এজেন্ডা বন্ধ হয়ে যাবে। সেই সাথে বন্ধ হয়ে যাবে ঋণের সাথে শর্তযুক্ত মুরুব্বীদের দাদাগিগির রাস্তা গুলো !!!